১৯৫৬ সাল। পাকিস্তান সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের ফলে বাস্তুচ্যুত মুসলিম পরিবার এবং নদী ভাঙনের ফলে বাস্তুচ্যুত পরিবারের জনগণকে স্থায়ী ঠিকানায় পুনর্বাসিত করা হবে। পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় এই সিদ্ধান্তের আওতায় জনবসতি গড়ার অংশ হিসাবে যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বসতপুর এলাকায় মাকলা বিল হিসাবে পরিচিত বিশাল জলাশয়ের উঁচু জায়গায় স্থান নির্ধারণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় দুটি গ্রাম। যার একটি আজকের বসতপুর ১নং কলোনী। জৈনক মোঃ হারেজ মিয়া নামে একজন জনদরদী ব্যক্তির একান্ত প্রচেষ্টায় সেই ১৯৫৬ সালে প্রথম ধাপে ১০০টি পরিবার এবং দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে ১৫০টি সর্বমোট ২৫০টি বাস্তুচ্যুত ছিন্নমূল পরিবারের নামে জমি হস্তান্তরের মাধ্যমে জনবসতি হিসাবে গড়ে তোলা হয় আজকের বসতপুর ১নং কলোনী গ্রামটি। যা প্রাথমিক পর্যায়ে হারেজ নগর হিসাবে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু জনাব মোঃ হারেজ মিয়ার অনাগ্রহের কারণে বসতপুর ১নং কলোনী হিসাবেই সুপরিচিত হয় গ্রামটি। এই ২৫০টি পরিবারের কোমলমতি শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার মানষে গড়ে তোলা হয় বসতপুর কলোনী ফ্রি প্রাইমারি স্কুল নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় – যার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় জনাব মোঃ নিজাম উদ্দীন মিয়া নামে এক শিক্ষিত তরুনের হাতে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে একজন শিক্ষকের পক্ষে দায়িত্ব পালন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ায় এবং শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করার মতো শিক্ষিত ব্যক্তি না পাওয়ার প্রেক্ষিতে সুদূর কুমিল্লা থেকে জনাব মোঃ ইয়াসিন সরকার এবং জনাব মোঃ সাখাওয়াত হোসেন নামের দুই তরুণকে নিয়ে এসে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। শিক্ষক নিয়োগের ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে যুক্ত হন জনাব মৌঃ মোঃ মোসলেম আলী, জনাব মোঃ খোরশেদ আলম এবং জনাব মোঃ নেছার উদ্দীন। ১৯৬৯ সালে জনাব মোঃ নিজাম উদ্দীন মিয়া বর্তমান বাগআঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করলে প্রথমে জনাব মৌঃ মোঃ মোসলেম আলী এবং পরবর্তীতে জনাব মোঃ খোরশেদ আলম প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার প্রায় ৩৭০০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করলে শিক্ষক পরিবর্তনের অংশ হিসাবে জনাব মোঃ নিজাম উদ্দীন মিয়া বদলী হয়ে পুনরায় বসতপুর কলোনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন ০১-০৭-১৯৭৩ সালে।